সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৮ পূর্বাহ্ন
কলাপাড়া প্রতিনিধি: কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা’র কার্যালয়ের ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ রসিদ জি- ১৬৪৪৩০। ৮ জুন ২০১৯ উক্ত রসিদে আম্বিয়া খাতুনের নামে ২৩ নং সোনাতলা মৌজার ৫৯১/১ খতিয়ানে ২.৮৭৫০ একর জমির ১৩৭৯ থেকে ১৪২৫ পর্যন্ত ৪৬ বছরের কর ৩৫৮৮ টাকা গ্রহন করেন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা। অথচ রসিদ’র কার্বন কপিতে খতিয়ান, জমির পরিমান এবং খাজনা আদায়ের সাল এক নয়। তবে মৌজা, টাকার পরিমান, স্বাক্ষর, তারিখ এক। এভাবেই ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ রসিদ (খাজনা দাখিলা) একটি সংঘবদ্ধ জালিয়াত চক্রকে সরবরাহ করেছেন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, নীলগঞ্জ ইউনিয়নের ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোসা: তানিয়া আক্তার মুক্তা, ০৮-০৫-১৯ তারিখ সোনাতলা মৌজার এসএ ২ নং সিটভূক্ত ১১৮৬, ১১৮৭ নদী’র দাগের ২.৮৭৫০ একর জমির, ১৩৭৯ থেকে ১৪২৫ পর্যন্ত, ৪৬ বছরের ভূমি উন্নয়ন কর রসিদ প্রদান করেন আম্বিয়া খাতুন’র নামে। অফিসে সংরক্ষিত উক্ত রসিদ’র কার্বন কপিতে সেটেলমেন্ট খতিয়ান’র পরিবর্তে রেকর্ডীয় খতিয়ান ৯১ লেখা রয়েছে। জমির পরিমানও পাল্টে ১.৮৭৫০ এবং কর আদায়ের সাল ১৩৭৯-৯৭ লেখা রয়েছে। অথচ সোনাতলা মৌজার রেকর্ডীয় ৯১ খতিয়ান এর মালিক আছিয়া খাতুন।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, একটি সংঘবদ্ধ জালিয়াত চক্র সেটেলমেন্ট কেস ৪৪কে/৫২-৫৩ ও ৫০কে/৬৬-৬৭’র দ্বারা সাড়ে সাত একর জমির ভুয়া বন্দোবস্ত মালিকানা সৃষ্টি করে উপজেলার তুলাতলি গ্রামের মোন্তাজ উদ্দীন মৃধা’র কন্যা আম্বিয়া খাতুন’র নামে। সৃষ্টি করা হয় ৩৯২২ ও ৩৯২৩ বিএস দাগ, সহিমোহর পর্চা, বিএস হাত পর্চা। এরপর ০৯-০৫-১৯ তারিখ ইলিশ’র অভয়াশ্রম খ্যাত আন্ধারমানিক নদীর পাঁচ একর জমি পৃথক দু’টি সাব কবলা দলিলে, যার নম্বর ২০৫২/১৯ এবং ২০৫৩/১৯, বিক্রী করে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় জালিয়াত চক্রটি। সাব রেজিষ্ট্রার কাওসার খান দলিল দুইটি রেজিষ্ট্রী করেন।
এ বিষয়ে নীলগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোসা: তানিয়া আক্তার মুক্তা বলেন, ’সোনাতলা মৌজার রেজিষ্ট্রারে ৫৯১/১ খতিয়ান নেই। এর আগে অনেকে বিষয়টি জানতে চেয়েছে। দাখিলার মূল কপি না দেখে কিছু বলা যাবে না। ’
সাব রেজিষ্ট্রার কাওসার খান (বর্তমানে নারায়ন গঞ্জের আড়াই হাজার ষ্টেশনে কর্মরত) বলেন, ’দলিল রেজিষ্ট্রী করার সময় ভূমি অফিসের কাগজপত্র দেখে আমি রেজিষ্ট্রী করেছি।’
কলাপাড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) জগৎ বন্ধু মন্ডল বলেন,’ এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছি। তদন্ত চলমান আছে। তদন্ত শেষ না হতে কিছু বলতে পারছি না। এছাড়া দু’এক দিনে নীলগঞ্জ তহশিল অফিস আমি পরিদর্শন করবো।’
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহম্মদ শহিদুল হক বলেন, ’সহকারী কমিশনার (ভূমি), কলাপাড়া কে বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে।’
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মো: কামাল হোসেন বলেন, ’যদি বিষয়টি সঠিক হয়। এগুলো আমরা কোন ভাবেই বরদাশত করবো না।’
Leave a Reply